শব্দ, পত্র, ভ্রম

শব্দ, পত্র, ভ্রম

রবিউল আলম
 
::
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ছিলেন অত্যন্ত পরোপকারী। মানুষকে তাঁর সাধ্যানুযায়ী সহায়তা করতেন। একদিন এক ব্যক্তি এসে সাহায্য চাইলেন। বললেন, বড় দূরাবস্থায় আছি। বিদ্যাসাগর মহাশয় বললেন তা তোমার ‘আকার’ দেখেই বুঝেছি। বিদ্যাসাগর মহোদয়  দূরাবস্থা শব্দে ‘র’ এর পর আকার এর কথা বলেছিলেন। শব্দটি দূরাবাস্থা নয়, ‘দূরবস্থা’। 
 
আমরা অফিসে বা ব্যক্তিগত পত্র লিখতে এমন ভুল প্রায়ই করি। খসড়া (ডিএফএ) সংশোধনের উছিলায় কখনো দেখা যায় উর্ধতনের তরফেও এমন ভুল নাজিল হয়। এই যেমন, প্রায় চিঠিতে আমরা ‘এতদবিষয়ে জানানো যাচ্ছে যে….’ কিংবা ‘এতদ্বারা জানানো যাচ্ছে যে,…’ লিখে বাক্য শুরু করি।  প্রথম বাক্যাংশ সঠিক হলেও দ্বিতীয়টি কিন্ত অশুদ্ধ। ‘এতদ্বারা’ একটি ভুল শব্দ। ‘এত’ শব্দের অর্থ দ্বারা পরিমান বোঝায়, অর্থাৎ এর অর্থ অনেক বা বেশী। ‘এতদ্বারা’ শব্দ লিখলে অর্থ দাঁড়ায় ‘বেশিদ্বারা/অনেকদ্বারা জানানো যাচ্ছে যে…”।  ‘এতদ’ শব্দের অর্থ এটা, ইহা, এই। লিখতে হবে এতদ্দ্বারা…. অর্থাৎ ইহার দ্বারা/এর দ্বারা।
 
 
অফিশিয়াল চিঠিতে আমাদের খুব পরিচিত বাক্য হচ্ছে ‘উপরোক্ত বিষয়ের প্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে . . . ’।  মজার বিষয় হচ্ছে ‘প্রেক্ষিত’ এবং ‘উপরোক্ত’ শব্দ দুটির ব্যবহার হলেও শব্দ দুটি একেবারেই অশুদ্ধ। তাহলে শুদ্ধ কী? ‘প্রেক্ষিত’ শব্দের অর্থ হচ্ছে, দেখা/দৃষ্টি/দর্শিত।  শব্দ দুটির শুদ্ধ বানান হলো- পরিপ্রেক্ষিত এবং উপর্যুক্ত।  বিশ্বাস না হলে অভিধান উল্টে দেখা যেতে পারে।  সঠিক বাক্যটি হবে, ‘উপর্যুক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে’। আবার এমনও বাক্য হয়, ‘উল্লেখিত পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে . . .’।  এখানেও শব্দটি উল্লেখিত নয়, অভিধানেও নেই। শুদ্ধ শব্দ হবে উল্লিখিত।  একইভাবে আমরা ভুল শব্দটিও অতিসতর্ক হয়ে ‘ভূল’ লিখি!
 
আবার আমাদের সবচিঠিতে ‘অত্র শাখা’ শব্দদ্বয় দিয়ে কমপক্ষে একটি বাক্য থাকে।  অনেকে জানিনা  ‘অত্র শাখা’ একটি ভুল শব্দযৌগ।  ‘অত্র’ অর্থ এখানে, যত্র অর্থ যেখানে, তত্র অর্থ সেখানে।   ‘অত্র শাখা’ লিখলে অর্থ দাঁড়ায় ‘এখানে শাখা’!   শুদ্ধ হবে  ‘এ শাখায়’ বা ‘এই শাখায়’ কিংবা ‘এ বিষয়ে’ বা ‘এই বিষয়ে’।
 
আরেকটি সাধারণ প্রসঙ্গ হচ্ছে ‘কি ও কী’। অনেকের চিঠিতে ‘কি’ ও ‘কী’ শব্দে বানানবিভ্রান্তি লক্ষ্য করা যায়।  ‘কি’ ও ‘কী’ দুইটি আলাদা শব্দ।  এটা অনেকেই জানিনা।  কোন প্রশ্নের উত্তর হ্যাঁ বা না হলে সেসব প্রশ্নে বানান ‘কি’ হবে। যেমন, তুমি কি খেয়ে এসেছ? তুমি কি কাজ করছ? এসব প্রশ্নের উত্তর হ্যাঁ বা না দিয়ে দেয়া যায়।  আবার যেসব প্রশ্নের উত্তর হ্যাঁ বা না দিয়ে দেয়া যায় না সেক্ষেত্রে ‘কী’ হবে। অর্থাৎ ‘কী’ শব্দ দিয়ে প্রশ্ন করলে ব্যাখ্যামূলক উত্তর হয়। যেমন, তুমি কী রঙের বেলুন নিয়ে এসেছ? তুমি কী কাজ করছ? চিঠিতে আমরা এসব ভুল অহরহ করি।  আরেকটি ভুল করি বহুবচনে লিখতে গিয়ে। আমরা প্রায়শ লিখি, ‘আপনাদের অবগতির জন্য সকল কাগজপত্রাদি প্রেরণ করা হলো’।  এখানে ‘সকল কাগজপত্রাদি’ শব্দযৌগ একটি হাস্যকর ভুলের তৈরি করে।  শুদ্ধ বাংলায় লিখলে, ‘সকল কাগজপত্র’ বা ‘কাগজপত্রাদি’ লিখতে হবে।  একইভাবে ‘যাবতীয় পুস্তকাবলি’ অশুদ্ধ।  শুদ্ধ হবে- ‘যাবতীয় পুস্তক’ / পুস্তকাবলি,  ‘বহু পণ্ডিত ব্যক্তিরা’ (অশুদ্ধ)।  শুদ্ধ হবে – ‘বহু পণ্ডিত ব্যক্তি’ / পণ্ডিতগণ।  ‘সকল শহীদদের’ (অশুদ্ধ)।  শুদ্ধ হবে-‘সকল শহীদের’/ শহীদদের।
 
অফিশিয়াল চিঠিতে পুনরায় অর্থে পুনঃ শব্দটি আমরা যত্রতত্র ব্যবহার করি।  এ শব্দ সবসময় ব্যবহার করা যায় কি? পুনঃ শব্দটি ব্যবহারের নিয়ম রয়েছে। এক্ষেত্রে ‘প’ এবং ‘স’ বর্ণ দুটি গুরুত্বপূর্ণ। মূল শব্দের প্রথমে প এবং স বর্ণ থাকলেই কেবল পুনঃ (পুনরায় অর্থে) ব্যবহার করা যায়।  যেমন, পুনঃপ্রচার (পুনঃ +প্রচার), পুনঃসম্প্রচার (পুনঃ+সম্প্রচার)।  মূল শব্দে অ, আ, উ থাকলে বিসর্গ পরিবর্তিত হয়ে “র” রূপ ধারণ করে এবং সঙ্গে স্বরাকার যুক্ত হয়। যেমন- পুনরাদেশ (পুনঃ+আদেশ), পুনরুক্তি (পুনঃ+উক্তি) । আর যদি মূল শব্দে অ, আ, উ, স ও প কোনটিই না থাকে তবে পুনঃ শব্দের বিসর্গ রেফ- এ পরিবর্তিত হয়। যেমন- পুনর্গঠন, পুনর্জীবিত, পুনর্মিলন ইত্যাদি।
 
কিছু চিঠিতে ক্রমিক, নম্বর, খ্রিষ্টাব্দ, তারিখ শব্দগুলো বোঝাতে সংক্ষেপে ‘ক্রঃ’,  ‘নং’, ‘খ্রিঃ বা ‘তাং’ লিখি।  শব্দ সংক্ষেপ করার জন্য আমরা বিসর্গ এবং অনুস্বার ব্যবহার করি। এটিও একটি ভুল পদ্ধতি।   বিসর্গ(ঃ) এবং অনুস্বার(ং) দুটিই ব্যঞ্জন বর্ণ।  ব্যকরণবিধি মোতাবেক শব্দ সংক্ষেপ করার জন্য একবিন্দু ব্যবহার করা হয়।  লিখতে হবে ‘ক্র.’, ‘ন.’, খ্রি., বা ‘তা.’।   তাং, সাং, নং হবে না।  অনুস্বার এর প্রসঙ্গ যখন এসেই পড়ছে তখন আরেকটি তথ্য দেয়া যাক। অনুস্বার সাধারণত শব্দের শেষে ব্যবহৃত হয়। যেমন-গাং, ঢং, রং, পালং ইত্যাদি।  অনুস্বার এর সঙ্গে স্বরাকার যুক্ত হলে ‘ঙ’ ব্যবহার করতে হয়। বাঙালি শব্দে অনুস্বার এর সঙ্গে আকার যুক্ত হয় তাই তা অনুস্বার না হয়ে ‘ঙ” লিখতে হয়। অনুরুপভাবে  ‘রং’ লিখি কিন্তু এ-কার যুক্ত করলে লিখতে হবে ‘রঙের’। ভাঙা, ডাঙা, চাঙা ইত্যাদি উদাহরণ দেয়া যায়।
 
বিসর্গ (ঃ) নিয়ে আর একটু  প্রাসঙ্গিক কথা না বললে খটকা থেকে যায়।  অনেকে বিসর্গ (ঃ) ও কোলন চিহ্ন (:) ব্যবহারে ভুল করেন।  চিহ্ন দুটি দেখতে একই রকম হলেও বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। একটিতে দুটি শুন্য রয়েছে। অপরটিতে দুটি বিন্দু রয়েছে। একটি বর্ণ, অন্যটি যতি চিহ্ন। আমরা সাধারণত এভাবে লিখি – নামঃ, পিতার নামঃ, স্থায়ী ঠিকানাঃ। এভাবে লেখা ভুল। তাহলে ঠিকটা কী?  সঠিক হবে- নাম: পিতার নাম: স্থায়ী ঠিকানা: । বাংলা ভাষায় বিসর্গ বর্ণের ব্যবহার খুব সীমিত। বিসর্গ বর্ণটিকে যতি চিহ্ন হিসেবে ব্যবহার করা অশুদ্ধ।  আবার অনেকে শব্দের শেষে বিসর্গ লিখে থাকেন। যেমন, ফলতঃ, মূলতঃ, কার্যতঃ, প্রধানতঃ, ক্রমশঃ ইত্যাদি। বাংলা একাডেমীর প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম বইয়ে উল্লেখ রয়েছে যে, শব্দের শেষে বিসর্গ থাকবে না।  যেমন- ক্রমশ, প্রথমত, মূলত, প্রধানত, সাধারণত, ফলত, বস্তুত ইত্যাদি। এছাড়াও কিছু শব্দে শব্দমধ্যস্থ বিসর্গ-বর্জিত রুপ গৃহীত হবে। যেমন- দুস্থ, নিস্তদ্ধ, নিশ্বাস ইত্যাদি।
 
ব্যাংকিং খাতে ইংরেজী ভাষা হতে প্রচুর শব্দ ধার করা হয়েছে। যেমন ওয়ার্কষ্টেশন, ষ্টোর, ষ্টল, রেজিষ্টার, মাষ্টার ইত্যাদি। এসব শব্দ লিখতে গেলে প্রায়ই বিভ্রাট দেখা যায়।  ইংরেজি শব্দ বাংলায় লিখতে  ‘S” থাকলে ‘স’ আর Sh থাকলে ‘শ’ হয়। আর কোন অবস্থাতেই ‘ষ’ নয়। ইংরেজি শব্দে ‘st’ থাকলে ‘স্ট’ হয়।  বাংলা শব্দে পুরস্কার, আবিষ্কার লিখতে গিয়ে অনেকে মুশকিলে পড়ি। কোনটি হবে?  ‘ষ’ না ‘স’? ব্যাকরণগত দিকে না গিয়ে সহজে বলি, যদি শব্দের প্রথম বর্ণের সঙ্গে যদি ই-কার বা উ-কার থাকে তাহলে ‘স’ হয়। যেমন- তিরস্কার, পুরস্কার। আর যদি শব্দের দ্বিতীয় বর্ণের সাথে ই-কার বা উ-কার থাকে তাহলে ‘ষ’ হবে।  আবিষ্কার, পরিষ্কার, বহিষ্কার, অনুষ্ঠান ইত্যাদি।
 
সত্যি বলতে কি, ভাষার রীতিগুলো যত পড়বেন খুব মজার ও আনন্দদায়ক। তবে বানানরীতি সবসময় যে স্থির ছিল তাও কিন্তু নয়। ‘ইতিমধ্যে’ ও ইতোমধ্যে শব্দদুটি নিয়ে কলকাতার সুশীলরা একসময় ঝগড়ায় লিপ্ত হন।  ১৯৩৬ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ‘বানান সংস্কার সমিতি’ গঠন বাংলা শব্দের বানানের দফারফা করার সিদ্ধান্ত নেন। রবি ঠাকুর লিখলেন, ইতিমধ্যে’র শুদ্ধরুপ ‘ইতোমধ্যে’ কথাটার ওকালতি উপলক্ষ্যে আইনের বই ঘাঁটার প্রয়োজন অনেক আগেই ফুরিয়েছে।  অর্থাৎ তদ্দিনে ইতিমধ্যে শব্দটি বাংলা ভাষায় বহুল প্রচলিত হয়ে পড়ছে।
 
বানান নিয়ে কথা হচ্ছে অথচ বাংলা একাডেমি এর কথা আসছে না সেটা জানি কেমন দেখায়! বাংলা একাডেমির বাংলা বানানরীতি সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা সমালোচিত হলেও দীর্ঘকাল একাডেমিই বাংলা বানানে অভিভাবকের মতো কাজ করেছে। ফলে তাদের বানানরীতি শ্রদ্ধারচোখেই দেখা হয়েছে এতোকাল। বাংলা একাডেমীর বানানরীতি অনুসারে নাবোধক বাক্যে ‘না’ এবং ‘নি’ ব্যবহৃত হয় বাক্যের শেষে। যেমন- অন্যায় কাজ করা যাবে না, আমি কাজটি করিনি ইত্যাদি। প্রথম বাক্যে শেষে রয়েছে ‘যাবে না’ এবং দ্বিতীয় বাক্যের শেষে রয়েছে ‘করিনি’। বানানরীতি অনুসারে বাক্যের শেষে ‘না’ লিখলে আলাদা করে লিখতে হবে (যাবে না) এবং ‘নি’ লিখলে একসাথে লিখতে হয় হবে। যেমন, করিনি, খাইনি, যাইনি, ঘুমাইনি ইত্যাদি।
 
আমাদের অফিসগুলোতে পত্র লিখকদের “ঈ-কার”, “ই-কার” নিয়েও বিভ্রান্তি চোখে পড়ার মতো। বিশেষকরে ‘সরকারি’, ‘দরকারি’ শব্দগুলোর বানানে  ‘কারী’ ও ‘কারি’ কোথায় কোনটি ব্যবহার হবে তা নিয়ে দ্বিধান্বিত অনেকে। প্রবেশ+কারী- প্রবেশকারী, আবেদন+কারী- আবেদনকারী, সহ+কারী- সহকারী হলে প্রশ্ন হতে পারে সরকারী ও দরকারী কেন নয়? রহস্য হলো, সরকার এবং দরকার শব্দ দুটি বাংলা নয়, ফারসি।  বিদেশি শব্দে ঈ-কার হয় না।  তাই শব্দদুটির বানানও ই-কার দিয়ে হয়।  আবার আরেকটি বানানরীতি হচ্ছে, সহযোগী, প্রতিযোগী, মন্ত্রী, দায়ী ও স্থায়ী ইত্যাদি শব্দের শেষে তা, ত্ব, জ প্রভৃতি প্রত্যয় যোগ হলে “ঈ-কার” পরিবর্তিত হয়ে “ই-কার” হয়। যেমন- সহযোগিতা, প্রতিযোগিতা, মন্ত্রিত্ব, প্রাণিজ, দায়িত্ব, স্থায়িত্ব ইত্যাদি।
 
অফিসে পত্র লেখকদের নিকট বাংলা ভাষার সবচেয়ে অবহেলিত নিপীড়িত বর্ণ হচ্ছে “ণ”। প্রায় শতভাগ ক্ষেত্রে আমরা ‘ন’ লিখি।  অথচ প্রশিক্ষণ, পর্যবেক্ষণ, বিশেষণ, গবেষণায় মূর্ধন্য ‘ণ’ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।  ‘ঋ’ ‘র’ ‘ক্ষ’ এবং ‘ষ’ এর পর মূর্ধন্য’ণ’ বর্ণটি ব্যবহার হয়। যেমন- ঋণ, প্রেরণ, পর্যবেক্ষণ, প্রশিক্ষণ ইত্যাদি। 
 
আবার আমরা কিছু চিঠিতে ‘শুধুমাত্র’, ‘কেবলমাত্র’ শব্দগুলো ব্যবহার করি। ‘শুধুমাত্র’ শব্দটি শুধু ও মাত্র এবং ‘কেবলমাত্র’ শব্দটি কেবল ও মাত্র শব্দযোগে গঠিত। শব্দ দুটি একটি অপরটির সমার্থক শব্দ। তাই ‘কেবল’ কিংবা ‘শুধু’ অথবা ‘মাত্র’ যে কোন একটি ব্যবহার করতে হবে। শুধুমাত্র, কেবলমাত্র অশুদ্ধ।  এশব্দগুলো বাহুল্য দোষে দুষ্ট।  আবার কোন পত্রের ‘বিষয়’ লিখতে গিয়ে বাক্যের শেষে ‘প্রসঙ্গে’ লিখে থাকি।  যেমন লিখি- ‘বিষয়: যোগদান প্রসঙ্গে’।  যেটা বিষয় সেটাই প্রসঙ্গ।  এই বাক্যেও সমার্থক দুটি শব্দের ব্যবহার থাকায় তা বাহুল্য দোষে দুষ্ট।  তাই ‘বিষয়’ লিখলে ‘প্রসঙ্গে’ লেখা অপ্রয়োজনীয়।   বাহুল্য বিষয়ে বলতে গিয়ে আর একটা কথা মনে পড়ে গেল। চিঠি-পত্রে বহুল-ব্যবহৃত ‘সবিনয়ে অনুরোধ’ কথাটি সঠিক নয়। অনুরোধ সবসময় বিনয়পূর্বকই করা হয়।  অনুরোধের ক্ষেত্রে ‘সবিনয়’ শব্দটিও বাহুল্য।
 
অনেকের কাছে আজকের এই পুরো লেখাটিই বাহুল্য মনে হতে পারে।  এমন মন্তব্যও হতে পারে, চিঠিতে এসব ভুল এ আর এমন কী? কেউ হয়তোবা উড়িয়ে দিবেন। কিন্তু ভুল বানান একজন কর্মকর্তাকে কতেটা নগণ্য করে তোলে তা নিয়ে ৯ আগস্ট ২০১৭ তারিখে বিবিসি একটি নিবন্ধ প্রকাশ করে।  লেনক্স মরিসন বিবিসিতে প্রকাশিত নিবন্ধে বলছেন, ‘ভুল বানান আপনাকে অন্যদের চোখে কমযোগ্য ও অপেক্ষাকৃত নির্বোধ হিসেবে উপস্থাপন করে”। 
 
লেখক: রবিউল আলম।  রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে সম্মান ও স্নাতকোত্তর করেন।  লিখেছেন বিভিন্ন দৈনিক ও লিটলম্যাগে। সম্পাদনা করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক প্রকাশনা “মনন”।  একজন সাংস্কৃতিককর্মী ও মঞ্চপ্রিয় ব্যক্তি রবিউল আলম বর্তমানে প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে কার্ডস ডিভিশন, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, প্রধান কার্যালয়, ঢাকায় কর্মরত আছেন ।